ড্রাগন ফল চাষের পদ্ধতি



ড্রাগন ফল এখন বাংলাদেশে সুপরিচিত একটি ফল। একসময় ড্রাগন ফল তেমনভাবে কেউ চিনতই না কারণ বাংলাদেশে এর চাষ হতো না। এখন প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশের ড্রাগন ফলের চাষ করা হয়। বিশেষ করে আমেরিকাতে ড্রাগন ফলের চাষ বেশি হতো বা সেখানকার সুপরিচিত ফল ছিল ড্রাগন। এরপর আস্তে আস্তে বিভিন্ন দেশেই ড্রাগনের চাষ করা শুরু করা হয় থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, চি্ন, বাংলাদেশ ইত্যাদি দেশে ড্রাগন ফল চাষ করা হয়।
ড্রাগন ফল চাষ
আমাদের দেশে ড্রাগন ফলের চাহিদা বেড়েছে। আগে একসময় ছিল এই ফল তেমন কেউ চিনতই না। এই ফল এখন বাংলাদেশে খুব ভালো চাষ হয় এবং এ ফলে চাষে অনেক লাভজনক।

ভূমিকা

২০০৭ সাল থেকে বাহিরের দেশে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করা হয়। ড্রাগন ফল মূলত দের থেকে আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।এখন বাংলাদেশ ড্রাগন ফলের চাষে সুপরিচিত হয়ে উঠেছে।ড্রাগন গাছ কিছুটা ক্যাকটাসের মতন দেখাতে এর পাতা নেই। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে ড্রাগন উপযোগী হয়ে উঠেছে। এছাড়াও ড্রাগন চাষের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে অনেক সহযোগিতা হয়েছে।

জাত নির্ধারণ ও চারা তৈরি

বাংলাদেশের জন্য বাউ ড্রাগন এক সাদা এবং বাউ ড্রাগন দুই লাল খুব ভালো। হর্টিকালচার সেন্টার ও বড় ধরনের নার্সারিতে ড্রাগন ফলের চারা খুব ভালো পাওয়া যায় এবং যারা নতুনভাবে ড্রাগন যায় শুরু করতে যাচ্ছে তারা নার্সারি বা হটিকালচারের সঙ্গে আলোচনা করে চাষ শুরু করতে পারে। ছাড়াও আমাদের দেশে হলুদ ড্রাগন ও লালচে দ্রাবনেরও চাষ হয়ে থাকে। নার্সারি থেকে চারা লাগানোর পরও চারা কলম করানো উচিত এতে করে ফল ভালো দেয়।

চাষের জন্য জমি নির্ধারণ

ড্রাগন চাষের জন্য উঁচু এবং মাঝারি উঁচু নির্বাচন করা দরকার এবং উর্বর মাটি হতে হবে।ড্রাগন চাষ সারা বছরে করা যায় তবে এপ্রিল থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত ড্রাগন চাষ করা উচিত। চারা রোপনের 15 থেকে 20 দিন আগে মই দিয়ে দুই তিনবারনির্বাচিত জমিতে চাষ দিয়ে নিতে হবে।

চারা রোপনের জন্য দেড় থেকে এক মিটার গর্ত করে ১৫-২০ দিন খোলা রোদে রাখতে হবে এরপরে এতে আরো ১৫ দিনের মতো সার দিয়ে রেখে দিতে হবে তারপরে চারা রোপন করতে হবে। পচা গোবর, টিএসপি জিপসাম জিঙ্কসালফেট ছাড় পরিমাণ মতো একসঙ্গে মিশিয়ে গর্তে ভরাট করে বেশ কিছুদিন রেখে দিতে হবে এরপরে চারা রোপন করতে হবে।

ড্রাগন গাছ ১.৫ এবং ২.৫ পর্যন্ত লম্বা হওয়ার কারণে চারটি করে গাছের মাঝখানে একটি করে সিমেন্টের খুঁটি পুঁতে গাছগুলোকে বেধে দিতে হবে এবং মাথার উপরে সাইকেল এর বা মোটরসাইকেলের টায়ার দিয়ে বেঁধে দিতে হবে যাতে গাছ ঝুলে না পড়ে।

সার প্রয়োগ

ড্রাগন গাছের বয়সের অনুযায়ী সার দিতে হয়। এক থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত গোবর সার চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ কেজি টিএসপি ২৫০ গ্রাম, ইউরিয়া ৩০০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম একসঙ্গে মিশিয়ে স্যারগুলো গাছে দিতে হবে। এই সারগুলো গাছের বয়স অনুযায়ী বেশি করে প্রয়োগ করতে হয় এই সবগুলো আমাদের জেনে গাছের বয়স অনুযায়ী ছাড় দিলে গাছের ফল বেশি হয় এবং ভালো হয়

সেচ ব্যবস্থা

ড্রাগন গাছ খুব বেশি জলবদ্ধতা বা খুব খরা সহ্য করতে পারে না তাই খুব শুষ্ক মৌসুমে ড্রাগন চাষ করা উচিত। ১৫ থেকে ২০ দিন পর পর সেচ দিতে হবে এবং ফুল থাকা অবস্থায় একবার সেচ দিতে হবে কুড়ি আশায় অবস্থায় একবার সে যেতে হবে তারপরে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে একবার সেচ দিতে হবে।

বালাই ব্যবস্থাপনা

ড্রাগন গাছের সচারচর তেমন কোন রোগ দেখা দেয় না তবে ঘোরাতে পানি জমে থাকলে গাছের গোড়া এবং কান্ড পচে যাওয়া রোগ দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে আমাদের খুব খেয়াল রেখে গোড়াতে যেন কোনরকম পানি জমে না থাকে। কাণ্ড ও গোরা পচে যাওয়া শুরু করলে এরম দমন করতে ২ গ্রাম হামার ও আরবা স্প্রে করতে পারেন। মাকড়সা বা মিলিবাগের আক্রমণ দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে দামদামা ব্যবহার করে পোকা দমন করা যেতে পারে।

পুষ্টিমান ও উপকারিতা

ড্রাগন ফলে রয়েছে পানি, শর্করা, র্প্রোটিন, আঁশ এই ধরনের পুষ্টিকর উপাদান। তাছাড়াও অল্প পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, চর্বি, ক্যারোটিন, ভিটামিনই, ভিটামিন এ উপাদান পাওয়া যায়। ফল চোখের জন্য খুব উপকারী একটি ফল এছাড়াও ড্রাগন ফল হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। ফাগুন ফল হার মজবুত করে এবং দাঁত মজবুত রাখতে সহায়তা করে কোলেস্টেরল কমানোর জন্য ড্রাগন ফল খুব উপকারী। ড্রাগন ফল ত্বক সুন্দর এবং উজ্জ্বল রাখতে ভিতর থেকে কাজ করে।

শেষ কথা 

এক সময় ড্রাগন ফল বাংলাদেশের চাষ হতো না বাংলাদেশের চাষ হওয়া শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক বেকারদের উপকার হয়েছে এছাড়াও এর ফলে অনেক পুষ্টিগুণ আছে যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ড্রাগন ফল চাষ শুরু করার আগে থেকে ড্রাগন ফলের চাষ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়ে সঠিক জমি নির্বাচন করে চাষ শুরু করা উচিত এবং ড্রাগনের গোড়ায় কোনোভাবে পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url